ভবন নির্মাণে ব্যয় পরিকল্পনা

আপনি স্বপ্নের বাড়ি নির্মান করতে চাচ্ছেন কিন্তু কেমন খরচ হবে সেটা বুঝতে পারছেন না? হ্যা ঠিক ধরেছেন তাহলে আপনার জন্য এই লেখাটি, ভবন নির্মানের ব্যয় নিয়ে যত খুটিনাটি আছে সবকিছুই আজকে আলোচনা করবো ইন শা আল্লাহ।

একটি নির্মাণ বাজেট কোন প্রকল্পের মোট খরচ অনুমান করতে ব্যবহৃত হয়, হোক সেটি কোন নতুন ভবন, রাস্তা বা সেতু। একজন সাধারণ ঠিকাদার পেশাদার এস্টিমেটরদের সাহায্যে এবং সরবরাহকারী এবং উপ -ঠিকাদারদের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি নির্মাণ বাজেট তৈরি করে। একজন ঠিকাদার ক্লায়েন্ট বা ডেভেলপারের জন্য অ্যাকাউন্টিংয়ের উদ্দেশ্যে একটি বাজেট তৈরি করেন, যা একটি ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী, কর্পোরেশন বা একটি সরকারী সংস্থা হতে পারে।একটি নির্মাণ বাজেট প্রায়শই নির্ধারণ করে যে আপনি কত দ্রুত একটি প্রকল্প সম্পন্ন করতে পারেন, আপনি যে দক্ষতার স্তর ভাড়া করবেন এবং আপনি যে ধরনের প্রযুক্তি এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। একটি স্মার্ট বাজেট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পূর্বপরিকল্পিত যাতে আপনাকে সর্বাধিক উত্পাদনশীলতা এবং দক্ষতা পেতে পারে যখন অতিরিক্ত খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

নির্মান ব্যয়ের পরিকল্পনাঃ আপনি একটি প্রকল্প বাজেট পরিকল্পনা করতে পারেন তার অনেক উপায় আছে, এবং সাধারণত পূর্বের অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করে কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে। গ্রামের মিস্ত্রিরা একটা আনুমানিক ধারনা করে নির্মান ব্যয় বলে দেয় যা কখনও সঠিক হয় আবার কখনো কম পড়ে যায়। আচ্ছা আমি আরো ক্লিয়ার করে দিচ্ছি____

*সিভিল কাজ (নির্মান সামগ্রী,লেবার ব্যায়,মেশিনারি ব্যয়) ভবন ব্যয়ের = ৭৫%। যার মধ্যে ফাউন্ডেশিন ব্যয় ১৫% হবে।

*পানি সরবরাহ ও স্যানিটারি ব্যয় ভবন ব্যয়ের= ১৫%

*বিদ্যুৎ ব্যয় ভবন ব্যয়ের =৯%

* গ্যাস ও অন্যান্য ব্যয় ভবন ব্যায়ের= ১%

ভবনের বিভিন্ন অংশ অনু্যায়ী নির্মান ব্যয়ের নমুনা যদি বলি তাহলে প্লিন্থ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন ব্যয় ভবন নির্মানের ২০% এবং সুপার স্ট্রাকচার বা ফাউন্ডেশনের উপরের অংশের ব্যয় মোট ভবন ব্যয়ের ৮০%। এই হল ১০০% একটা প্রাথমিক ব্যায়ের নমুনা যা কম বেশি একটু এদিক সেদিক হতে পারে। আপনার নির্মাণ বাজেটকে শুরুতেই এই দুটি বিভাগে বিভক্ত করা আপনাকে আপনার বাজেটকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। আপনি যেকোনো বিভাগে আপনার সমস্ত ব্যয়ের একটি ভাল ধারনা পেতে পারেন, এবং আপনি ঘটনাক্রমে যে কোনও সম্ভাব্য খরচ বাদ দিতে পারেন তা চিহ্নিত করা সহজ হয়ে যায়।

এছাড়া ক্লায়েন্টের মোট প্রকল্প বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

  • নির্মাণ খরচ।
  • জমি বা সম্পত্তি অধিগ্রহণ।
  • ড্রয়িং অনুমোদন ফি।
  • ফিক্সচার, জিনিসপত্র এবং সরঞ্জাম স্থানান্তরের খরচ, চলমান কর্মীদের সাথে যুক্ত খরচ ।
  • মূল কাজের বাইরে চুক্তিমুলক কাজ।
  • পরামর্শদাতা ফি।
  • ভ্যাট।

নির্মাণের জন্য জমি ক্রয়ঃ যাদের জমি আছে তাদের এটা নিয়ে ভাবা লাগবে না, যাদের জমি ক্রয় করা লাগবে তাদের জন্য জমি উপযুক্ত জায়গ্য দেখে নিতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস, রাস্তার ধারে, উচু রাস্তা, বর্ষায় পানি যেন জমে না যায় এরুপ দেখে কিনতে হবে। মোটামুটি ২ কাটা জমিতে একটা ভাল বাড়ি নির্মান করা সম্ভব। জমির দাম নির্ভর করে জায়গা ,অঞ্চল্‌ পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে। সময়ভেদে দাম বাড়তেও পারে আবার কমতে পারে।

প্রফেশনাল ও পরিসেবামুলক ব্যয়ঃ নির্মাণ প্রকল্পগুলির জন্য বিস্তৃত পেশাদার পরামর্শ এবং অন্যান্য পরিসেবার প্রয়োজন। আপনার প্রকল্পের সুযোগের উপর নির্ভর করে, আপনি ডজনখানেক বিভিন্ন পেশাগত পরিসেবা এবং নির্মাণের সাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনের অধীনে থাকতে পারেন। নির্মাণ প্রকল্পের সময় বিভিন্ন ফি জমা হবে, কিন্তু এখানে প্রাক-নির্মাণের সাথে যুক্ত যেসব প্রাথমিক ফি রয়েছে সেগুলা হল :

  • স্থানীয় সরকার/ পৌরসভা থেকে বিল্ডিং ও অকুপেন্সি পারমিট এবং পারমিট ফাইল করার জন্য সংশ্লিষ্ট খরচ।
  • জরিপ, অধ্যয়ন এবং দক্ষ জিওটেক ইঞ্জিয়ার দ্বারা মাটি পরীক্ষার ফি।
  • স্থাপত্য এবং নকশা পরিষেবা, মাস্টার প্ল্যানিং ।
  • পেশাদার প্রকৌশল স্ট্যাম্প, যেমন কাঠামোগত, বৈদ্যুতিক, যান্ত্রিক বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের খরচ।

প্রকল্পের জন্য আপনার মোট খরচ বোঝার জন্য অত্যন্ত বিশদ এবং সঠিক নকশা পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য। ডিজাইন প্লান অঙ্কন কাজের সুযোগ নির্ধারণ করে, এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা ছাড়াই, আপনি গুরুতর খরচ অতিক্রম করতে পারেন। সুপ্রতিষ্ঠিত এবং স্পষ্ট অঙ্কন প্রকল্পের  বাজেট এর সমস্যাগুলি হ্রাস করতে সহায়তা করে। একজন ইঞ্জিয়ার/আর্কিটেক্ট ড্রয়িং প্লান প্রতি স্কয়ার ফিটে ১০টাক নেয়। অর্থাৎ ১৪০০ স্কায়রফিট প্লানের জন্য প্রায় ১৪,০০০/- দিতে হয় । এরপর থ্রিডাইমেনশনাল ইন্টিরিওর ও এক্সটেরিওর ডিজাইনের জন্য প্রতি বর্গফুট ৩০-৫০ টাকা নেয়। একটা জিনিস মনে রাখবেন ইঞ্জিয়ারদের পিছনে টাকা খরচ করতে কৃপনতা করবেন না, টেকশই ডিজাইনের জন্য ইঞ্জিয়ারিং ড্রয়িং এর বিকল্প নেই। সে হিসেবে মাস্টার প্লানের জন্য ৪০হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা মত ইঞ্জিয়ারদের পিছনে ব্যয় হবে।

কাঁচামালের খরচ ঃ দেশভেদে বা অঞ্চল ভেদে একেক জায়গায় একেক রকম ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। কোথাও ইট আবার কোথাও পাথর ব্যবহার করা হয়। আফ্রিকার উত্তপ্ত মরুভুমিতে মাটির বাড়ি বানানো হয়। আবার ইউরোপ ,আমেরিকার মত উন্নত দেশ গুলোতে কাচের বাড়ি অথবা ফ্রেম স্ট্রাকচারের বাড়ি নির্মান করা হয়। বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ায় ইট , বালি ,রড , সিমেন্ট, সুরকি ইত্যাদি কাচামাল ব্যবহার করা হয়।

ইটঃ ইট কেনার ক্ষেত্র ইউনি ফর্ম সাইজ শেইপ দেখে কিনতে হবে। বাংলাদেশে ইট গাড়ি প্রতি হিসাব করা হয়। বর্তমান ১ গাড়ি  ভাল মানের ইটের দাম ১৫,০০০-২০,০০০ টাকা।

  • ১০” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি বর্গফিট গাথুনীতে ১০ টি ইট লাগে।
  • ০৫” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি বর্গ ফিট গাথুনীতে ০৫ টি ইট লাগে।

আর্কিটেকচারাল বাড়ি বানাতে বা যেকোন নান্দনিক স্থাপনা বানাতে এখন সিরামিক ইটের প্রচলন অনেক। এই সিরামিক ইট এক্ট লাল কালারের হয় আর মসৃন অনেক। এক ট্রাক সিরামিক, হলোব্রিকের দাম প্রায় ৩০,০০০ টাকা। এধরনের ইটে প্লাস্টার না করলেও হয় , শুধু পালিশ করেও করা যায় , যেখানে প্লাস্টারের খরচ তা বেচে যায়। একটি বাড়ি বানাতে কতগুলা ইট বা কয় গাড়ি ইট লাগবে তা বলা মুসকিল, তবে প্রতি স্কয়ার ফিটে ৪৮০ টা মত ইট লাগে। বেশি বেশি পরিবেশ বান্ধব ইট ব্যবহার করা উচিত।

বালিঃ বালির হিসাব করা হয় cft এককে। ইট গাথা , প্লাস্টার সব ক্ষেত্রেই বালি লাগে। ভাল উন্নত মানের বালি হল ডিমলা স্যান্ড , পদ্মা স্যান্ড, সাভার স্যান্ড এগুলার স্পেসিফিক গ্রাভিটি চেক করে কিনতে হবে। কোন বালি দিয়ে কোন অংশে কাজ হবে সেটা ড্রয়িংয়ে উল্লেখ করা থাকে। নরমালি এক ট্রাক বালির দাম আমদের দেশে ১৫,০০০-১৮,০০০ হাজার টাকা। একটু ভাল মানের বালির দাম ২০,০০০ টাকা ট্রাক প্রতি।

বালির হিসাবঃ

★ ১০৯ ফিট = ১২.২৫cft,

★ ১০০ sft ৫” গাথুনীতে ১:৫ অনুপাতে সিমেন্ট লাগে ২ ব্যাগ।

★ ১০০ sft ১০”গাথুনীতে ১:৫ অনুপাতে সিমেন্ট লাগে ৪ ব্যাগ। বালু লাগে ২৪ cft।

রডঃ ইঞ্জিয়ারিং ভাষায় রডকে রিবার বা রিইনফোর্সমেন্ট বলা হয়। ইট বালির পরে যা একটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান। পুরো ভবনের স্টাকচারাল কাঠামোর রুপ দিতে ও বিল্ডিং ভুমিকম্প টেক্সই করতে ভবনে স্টিল্ বার বা রড দিতে হয়। বাংলাদেশে কে.এস. আর. এম, বি এস আর এম কোম্পানির রড ভাল মানের। সবচেয়ে ভাল মানের রড যা ৭২-গ্রেড এম এস রড নামে পরিচিত, তার বিক্রয় মূল্য বর্তমানে প্রতি টন ৭৫ হাজার টাকার উপরে। গড়ে প্রতি ১০০ বর্গফুট জায়গার জন্য ১৫০-১৭০ কেজির মত রডের প্রয়োজন হয়।

সিমেন্টঃ সিমেন্ট এক টি গুরুত্বপূর্ন উপাদান বাড়ি নির্মানের জন্য । প্রতি ব্যাগের ৫০-কিলোগ্রাম সিমেন্ট থাকে। প্রতি ১০০ বর্গফুটের জন্য প্রয়োজন হয় ৮ ব্যাগ সিমেন্ট।বর্তমান বাজারে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের মূল্য  ৪৭০-৫০০ টাকা। ভাল ব্যান্ডের সিমেন্ট কেনায় উত্তম হবে।

ভবন নির্মাণে ব্যয় পরিকল্পনা – লেবার কস্ট/ মিস্ত্রিদের ব্যয়ঃ

লেবার কস্ট/ মিস্ত্রিদের ব্যয়ঃ  বাংলাদেশে সাধারনত কন্টাকে কাজ করা হয় ।বাস্তবসম্মত নির্মাণ বাজেটের একটি মৌলিক দিক হল আপনার শ্রমিকের  খরচ সম্পর্কে জেনে রাখা । ক্লায়েন্ট দৈনিক হাজিরা মুজুরি বাদ দিয়ে একটা বড় এমাউন্ট ফিক্সড করে। এতে করে মিস্ত্রিরা কাজে ফাকি দেয় কম।নির্মাণ শ্রম খরচ অনুমান করা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ব্যয়ের একটি। যতক্ষণ না প্রকল্পটি চলছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য শ্রমিকদের সঠিক পরিমাণ কত হবে তা অনুমান করা কঠিন। যাইহোক, উৎপাদনকে ট্র্যাক এবং বাজেটে রাখতে কর্মীদের সাথে একত্রিত হওয়া এবং যোগাযোগের জন্য শ্রম খরচের অনুমান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার নির্মাণ প্রকল্পের মুনাফা বজায় রাখার জন্য শ্রমিকদের উত্পাদনশীলতা উন্নত করা একটি অপরিহার্য উপায়।

আপনার শ্রম বাজেট গণনা করার সময়, মানব সম্পদের প্রকৃত খরচের কথা মনে রাখবেন, যার মধ্যে রয়েছে:

  • কর্মচারী এবং সাব -কন্ট্রাক্টর উভয়ের জন্য প্রতি ঘণ্টায় মজুরি
  • কর্মীদের ক্ষতিপূরণ খরচ এবং কর্মচারীদের বেতন ভাতা
  • কর্মীদের জন্য ছুটির সময় এবং অসুস্থ সময়

দিনপ্রতি কাজের তদারকি করেন বাড়ির মালিক বা নির্মাতা, দিনশেষে টেকনিক্যাল  মিস্ত্রিদের বর্তমান ৫০০ টাকা ও জোগালে দের ৪০০ টাকা প্রদান করা হয়।

নির্মান সরঞ্জাম/ইকুয়েপমেন্ট ব্যয়ঃ প্রতিটি নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন আকারের সরঞ্জাম প্রয়োজন হয়। ঠিকাদারদের তাদের উপকরণ এবং শ্রমের তালিকা ব্যবহার করে তাদের কাজের জন্য যে ধরনের সরঞ্জাম প্রয়োজন হবে তা নির্ধারণ করতে হবে ।এই তালিকার উপর ভিত্তি করে, ঠিকাদারদের তাদের এলাকার বিশ্বস্ত সরবরাহকারীদের কাছ থেকে তাদের সরঞ্জাম ভাড়া নিতে হতে পারে। ভারী যন্ত্রপাতি ভাড়া প্রয়োজন এমন নির্মাণ প্রকল্পগুলির জন্য, সরঞ্জামগুলি ভাড়া দেওয়ার প্রকৃত খরচগুলি বেশ কয়েকটি খরচ বিবেচনা করে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • সরঞ্জাম ভাড়া ফি
  • ট্রান্সপোর্টেশান খরচ
  • অপারেটর খরচ এবং শ্রম খরচ সহ
  • জ্বালানি খরচ

সিভিল কাজ শেষ হওয়ার পর বাড়ির ফিনিশিং এর কাজ শুরু হয়। ফিনিশিং কাজ টা ক্লায়েন্টের উপর নির্ভর করে, তিনি যত নান্দনিক ডেকোরেশন চাইবেন ঠিক তত খরচ হবে। ফিনিশিং কাজের মধ্যে যেগুলা আছে তা হলঃ

  • স্যানেটারি ও ইলেক্ট্রিকাল
  • টাইলস
  • ওয়াল প্লাস্টারিং
  • দরজা জানালার গ্রিল
  • থাই গ্লাস
  • কিচেন ও টয়লেট ফিটিংস
  • প্যারাপেট ওয়াল/স্টিল গ্রিল

পানি সরবরাহ ও স্যানিটারি ব্যয়ঃ পানি সরবরাহ, ড্রেনেজ, স্যানিটেশন ইত্যাদি প্লাম্বিং সার্ভিস নামে পরিচিত। একজন ভালো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে অবশ্যই পানি সরবরাহ, ডিষ্ট্রিবিউশন পাইপ, ষ্টোরেজ ট্যাংক, ওয়াস বেসিন, ওয়াটার ক্লোজেট, ইউরিন্যাল, ট্যাপ, ভেন্ট পাইপ, সেপটিক ট্যাংক ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।পাইপের কাজের জন্য ভাল জি এই পাইপ এবং অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করুন।সুয়ারেজের (পয়:প্রণালীর) জন্য ভাল পিভিসি পাইপ অধিক সুবিধাজনক এবং টেকসই।পাইপের জোড়া লীক গ্রুফ্ হওয়া উচিত। পাইপ , এলবো, কমোড, সকেট, লংপ্যান, লোডাউন বেসিন,প্যাডেলস্ট্যান,মিরর, গ্লাস সেল্ফ, সোপ কেস, টাওরেল, রিং টাওরেল, সিংক কনসিল ষ্টপ কর্ক, বিব কর্ক, লং বিব কর্ক এ্যাংগেল ষ্টপ কর্ক, পিলার কর্ক, হেড সাওয়ার, মুভিং সাওয়ার, পুস সাওয়ার, বাথ ট্রাপ, বেসিন মিক্সার, সাওয়ার মিক্সার, বাথ ট্রাপ মিক্সার, হ্যান্ড সাওয়ার, সিংক মিক্সার স্যানেটারি ফিটিংস গুলার দাম সময়ভেদে বিভিন্ন রকম হয়। ভবন ব্যায়ের ১৫% টাকা স্যানিটারি ও পানি সরবরাহ কাজে ব্যয় হয়।

 

বিদ্যুৎ ব্যয় ঃ  ছাদ ঢালাইয়ের আগে  ছাদের ইলেক্ট্রিকাল কাজ গুলা করা হয়, এসময় পাইপ সকেট, ফ্যানের হুক ইত্যাদি বসানো হয়। এগুলার জন্য আলাদা ইলেক্ট্রিকাল মিস্ত্রি আছে তাদের আবার চার্জ আছে। তারা এগুলা কন্টাক এ করে। প্রতি বর্গফুটে ইলেক্ট্রিকাল ওয়ারিং কাজের জন্য ২১৫-২৫০ টাকা ধরা হয়।

 

বাড়ির দরজার চৌকাঠ বা ফ্রেমের দাম সাধারনত ২৫০০-৪৫০০০ টাকা। পাইকারি বাজার ছাড়াও বিভিন্ন স্বনামধন্য কোম্পানি দরজা প্রস্তুত ও বাজারজাত করে থাকে, এগুলার কোয়ালিটির উপর দাম নির্ভর করে। এই ধরনের জায়গায় দরজার ফ্রেমের দাম সাইজ, ম্যাটেরিয়াল প্রোপার্টি এবং ডিজাইনের প্রকারভেদে ৪,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।স্টিল বা কাঠের দরজার পানিতে নষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। কাঠে ঘুন লেগে যায়, বর্ষায় দরজা এটে যায়। স্টিলের দরজায় জং পড়ে যায়। এই কারণে বাথরুমে সাধারণত প্লাস্টিকের দরজা এবং ফ্রেমিং ব্যবহার করা হয়। পাল্লাসহ এধরনের দরজার দাম পড়ে সাধারণত  ৩,০০০-৪,০০০ টাকা।

টাইলস সাধারনত বর্গফুট হিসাবে বিক্রি হয়। মিরর টাইলস যেটা একটু জলজল করে সেগুলার দাম ১০০ টাকা বর্গফুট। এছাড়া নরমাল টাইলস গুলোর দাম সাধারনত ৭০ টাকা থেকে শুরু হয়। ভাল মানের টাইলস গুলোর দাম ৬০০/৭০০ টাকাও আছে।

একটা ১৫০০ স্কয়ার ফিটের ২ ইউনিটের বাড়ির জন্য সিভিল কাজ অর্থাৎ ছাদ ঢালায় পর্যন্ত ২০-২৫ লক্ষ টাকা মত লাগে। এর পরে ফিনিসিং টা মালিকের রুচির উপর নির্ভর করবে, তিনি যত ডেকোরেশন করবেন তত খরচ হবে।

1 thought on “ভবন নির্মানে যেসব ব্যয় পরিকল্পনায় আনতে হয় – ভবন নির্মাণে ব্যয় পরিকল্পনা”

Leave a Comment

error: Content is protected !!